সেলফি: এক ত্রাসের নাম!!
গতানুগতিক সময়ে অন্যতম জনপ্রিয় বিষয় হলো সেলফি। বিয়ের অনুষ্ঠান হতে শুরু করে রোগী দেখতে যাওয়া পর্যন্ত যেখানেই যাওয়া হোক না কেন আর যাইহোক না হোক সেলফি তোলা আবশ্যক।
সেলফি অত্যন্ত নিরীহ একটি বস্তু। এর কোন হাত-পা নেই। একে যেভাবে তোলা হয় সেভাবেই থাকে; অনেকটা পানির সাথে তুলনা করা চলে বৈকি! তাই এর কোন দোষ দেওয়া বুদ্ধিমানের কর্ম নয়। অতএব, সচেতন হতে হবে এর উত্তোলনকারীদেরই।
সাধারণত সেলফি বলতে আমরা “নিজের ছবি নিজে উত্তোলন করাকে” বুঝি। কিন্তু আজকালকার দিনে অন্যের দ্বারা তোলা ফটোও মানুষ সেলফি বলে চালিয়ে দিচ্ছে এবং তা ছড়িয়ে পড়ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যাকগে ভাবনার বিষয় তা নয়, ভাবনা লুকায়িত রয়েছে অন্য জায়গায়। [সে ব্যাপারে পরে আসছি]
এই তথাকথিত সেলফির প্রসারের অন্যতম কারণ হচ্ছে স্মার্টফোনের ব্যাপক বিস্তার ও সহজলভ্যতা। একসময় এমন একটি সময় ছিল যখন স্মার্টফোন তো দূরে থাক, সাধারণ একটি ফোনই ছিল মানুষের ক্রয় ক্ষমতায় বাইরে। আর নিউটনের ৩য় সূত্রের মতো, "প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকবেই।" অতএব এতে মানুষদের কাছে যোগাযোগ ও অন্যান্য বিষয় যেমন সহজলভ্য ও আরামদায়ক হয়েছে। তেমনি বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষগুলোর কার্যকলাপেরও ডিজিটালাইজেশন হয়েছে। যার বাস্তবিক রূপই ছবিতে দেখা যায়।
ভাত খাওয়ার যেমন নির্দিষ্ট স্থান, কাল, পাত্র রয়েছে। সকালের নাস্তা বিকেলে করলে যেমন আমরা তাকে ব্রেকফাস্ট বলতে পারি না। তেমনি মানুষেরও তার বিবেকবোধ দ্বারা সেলফি তোলার স্থান , সময়, পাত্র নির্ধারণ করা প্রয়োজন। সুন্দর একটি থালায় পোলায়, বিরিয়ানি অথবা রেজালা পরিবেশন করে যদি বাথরুমে খেতে দেওয়া হয়, তবে খাবার যত সুস্বাদুই হোক না কেন, কোন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ তা মুখেও তুলবে না [বিকৃত মস্তিষ্কের লোক হলে ভিন্ন কথা]। তেমনি তথাকথিত সেলফি তোলারও বিষয়নস্তু ও স্থান থাকা জরুরি। সকল ইভেন্টে যোগ দিলেই যেমন তার সাক্ষ্য রাখা যায় না [মানুষ বাসর রাতেও ঢোকে, তাই বলে কী ওখানে কী করেছে না করেছে তা নিশ্চয় বিকিয়ে বেড়ায় না? এক্ষেত্রেও বিকৃতি মস্তিষ্কের লোকদের এক্সেপসনাল হিসেবে ধরা হলো, এর চেয়ে খারাপভাবে বলা সম্ভব নয়।]
অতএব, সময় থাকতে সংযত হোন। মানুষ হিসেবে মানুষের মনুষ্যত্বের পরিচয় দিন, নিজের বিকৃত মানসিকতার পরিচয় বিলিয়ে বেরিয়ে সমাজে লজ্জিত হবেন না। তথাকথিত সেলফি তুলুন তবে মনে রাখবেন, সীমার অধিক কোনকিছুই ভালো নয়।
বি.দ্র.: নিরাপত্তার খাতিরে ও মানবিক দিক বিবেচনা করে ছবির চেহারা ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
©SaSagar
Comments
Post a Comment