একটি বাগডুম ও একটি "অধ্যেতাসংঘে"র গল্প?
আজ নববর্ষ। সালটা ৩০১৮।
একসময় এ বিলাসভূমিতে একটা স্থান ছিল। নাম তার বাগডুম। তাহারই মাঝখানে বটবৃক্ষের ন্যায় গজিয়া উঠিয়াছিল এক "অধ্যেতাসংঘ” নামক অকৃত্রিম বাহিনী।
তাহাদের যেমন গায়ের জোর, তেমন অদম্য দু:সাহস, তেমনি মজবুত তাহাদের ভিত। বছরের সর্বদা এদের প্রয়োজন হয় না, কদাচিৎ দেখতে পাওয়া যায়। এরা যখন যেথায় যায় সেথায় স্থান ফাকা হওয়া ছাড়া আর উপায় থাকে না। এরা যখন অন-ডিউটি থাকে, তখন এদের একা কোথায় দেখতে পাওয়া যায় না। একতাই এদের মূল শক্তি।
এরা অত্যন্ত ট্যালেন্টেড, ক্রিকেট থেকে শুরু করে কসাইগিরি সকল ক্ষেত্রেই এদের সাবলীল অংশগ্রহণ দেখা যায়। এরা অত্যন্ত পোষ্য ও অনুগত। দেশের জন্য যারপরনাই সচেষ্ট। প্রয়োজনে রক্ষীবাহিনীর সাথে হাতে হাত মিলিয়ে বোলিং করতেও এদের জুড়ি মেলা ভার। মাঝেমাঝে এদের মধ্য হতে অনেক রশীদ খান, সেনওয়ার্নের আর্বিভাব ঘটে। নিশানা অতটা নিখুঁত না হলেও হাতের জোর আছে বৈকি, তা অন্যদের চেয়ে বেশি বৈ কম নয়। দেশে যে এত ট্যালেন্ট, তা বোধ হয় এরা না এলে বোঝাই যেত না।
এদের মধ্যে কিছু রয়েছে অত্যধিক ট্যালেন্টেড। তাদের নিয়ে গঠিত হয়েছে স্পেশাল ফোর্স "থর-ফোর্স"। এদের পোশাক আশাক দেখলেই এদের আলাদা করে চেনা যায়। বেশ একটা হলিডের নায়কদের মতো স্টাইল, মাথায় হেলমেট, গায়ে হাফ-হাতা গেঞ্জি।তবে বেমানান এই বিষয়টা যে, হাতের বাইকের স্টেয়ারিং এর বদলে এদের থাকে বড় ডান্ডাওয়ালা আর মাথায় লোহা বসানো বিশেষ শক্তিশালী যন্ত্র যাকে বাংলায় অনুবাদ করলে হয় "হাতুড়ি" । এগুলোর আবার বিভিন্ন সাইজ রয়েছে, হাতের সক্ষৃতা আর সাচ্ছন্দ্য মোতাবেক সবাই প্রয়োজনীয় সাইজ বেছে নেয়, অনেক ঈদের শার্টের মতো। বাইক চালাতে অভ্যস্ততা না থাকলেও বিদ্যুতদেব Thor এর চেয়ে হাতুড়ি চালানোতে কম এক্সপার্ট নয়। যারা মেরুদন্ড অত্যাধিক সোজা হওয়ার ফলে মাঝে মাঝে রাস্তায় এসে অযথা বিশৃঙ্খলতা তৈরি করে তাদের এই স্পেশাল বাহিনীর স্পেশাল ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়, হাতুড়ির আলতো ছোয়ায় তাদের অত্যাধিক সোজা কোমর আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায়। কত সু্ন্দর মানবিক কাজ। ডাক্তার লাগল না, খরচাপাতি নেই, অল্প খরচে সকল ব্যামো ঠিক করে দেয়; শুধু পরের কয়মাস বেড রেস্ট নিতে হবে এই যা।
এদের একাত্মতা হিংসে হওয়ার মতোন। কেও একজন একবার এইসব মানবিক কাজ করতে গিয়ে পায়ের জিনিস গলায় পরিহিত হওয়ায়, অধ্যেতাসংঘের সবাই পরদিন নিজ পায়ের জিনিস গলায় তুলে নিয়ে এলাত্মতার পরম পরিচয় দিলেন, সাথের ফুলেল শুভেচ্ছা তো আছেই। আহা কী একাত্মতা। সেফুদা থাকলে নির্ঘাত বলে দিত, "কী হিংসে হয়, অধ্যেতাসংঘের মতো হতে চাও? পায়ের জিনিস গলায় পর হারামজাদা!"
আরেকবার এদেরই একজন মানবতার খাতিরে এক আম-ছাত্রীর ময়লা জামাটা খুলে ধুয়ে দিতে চাইল। তা-না মিডিয়া না জেনে না বুঝে কী না কী লিখে তার অপমান করল, এটা কী মানা যায়। পরে তো ঠিকই দেখা গেল সবই ভুল, তিনিও ফিরে পেলেন নিজের স্থান। কিন্তু ছবিগুলো? আরে এগুলো তো ইডিট করা যায় ভাই!!?
যাকগে সেকথা, একবার কিছু বখাটে শিক্ষাগ্রহণ ফাকী দেওয়ার নামে কী নাকি কী এক "খন্ড-সংশোধনের" নামে রাস্তা দখল কইরা বইসা থাকল। অধ্যেতাসংঘ কী তা মেনে নিতে পারে? তাদের সামনে এত বড় অন্যায় হইতেছে। তারা তাদের গোপন মিশনে নামল। শেষ পর্যন্ত কী আর অধ্যেতাসংঘের সাথে বখাটেরা পারে? বখাটেদের সকল নেতাদের পরম মমতায় বুঝিয়ে মামার বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হলো।
আর শিক্ষালয়ের পোলাপানদেরও বলি হারি। এতটুকুন এতটুকুন বয়স, তাও বখাটেদের অনুসরণ করতে হবে। আসলে বিদ্যার্জন ফাকি দেওয়ার ধান্দা সব, রাস্তা আটকে বসে থাকা! কত বড় অপরাধ!! বাগডুমে জনসংখ্যা যে হারে বাড়ছে, রাস্তার ঝাকে ঝাকে প্রাণী এদের দু-একজনের উপর "পাগলা হাতি" ওঠে যেতেই পারে। হাতিরাও তো মানুষ নাকি?!! এ নিয়ে রাস্তা অবরোধের কী আছে বুঝি না। এটাও তো একটা জন-কল্যাণমূলক কাজ কিনা? "জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ"।
আর অধ্যেতাসংঘ এত বড় সমাজকল্যাণ কাজের বিরোধিতা করতে দিবে কেন? রাস্তায় হাতি না চললে বাগডুমের কত ক্ষতি হবে না? নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা বাগডুমের উন্নয়ন করবে কী করে? সব চিকিৎসক-প্রকৌশলী হলে হবে অধ্যেতাসংঘে যোগ দাও সুখে থাক!
আর অধ্যেতাসংঘ এত বড় সমাজকল্যাণ কাজের বিরোধিতা করতে দিবে কেন? রাস্তায় হাতি না চললে বাগডুমের কত ক্ষতি হবে না? নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা বাগডুমের উন্নয়ন করবে কী করে? সব চিকিৎসক-প্রকৌশলী হলে হবে অধ্যেতাসংঘে যোগ দাও সুখে থাক!
এর মধ্যেই ঘটেছিল এক ঘটনা। ভিত্তিব্য হতে পাওয়া নির্দেশে অধ্যেতাসংঘ বাচ্চাদের কোমলভাবে বুঝিয়ে বিদ্যাগারে পাঠানোর উদ্দেশ্যে কাজ শুরু করলেন। তারাও রক্ষীবাহিনীকে তাদের কাজে সহায়তার অনন্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। বড় ভ্রাতা-গোষ্ঠী ছোট ছেলে ও "মেয়েদের" হালকা কোমল স্পর্শে বুঝিয়ে দিলেন এসব করা ভালো নয় বাগডুমের ভবিষ্যতেরা। আমাদের সমাজে বুঝানোর কোমল স্পর্শ বলতে আমরা বুঝি গালে অথবা হাতে আলতো স্পর্শ বা পায়ের আলতো পদাঘাত বা হাতুড়ির আলতো স্পর্শে ব্যামো ছাড়ানো?! কিন্তু অধ্যেতাসংঘের অতি ট্যালেন্টেড ভ্রাতাগণ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন এর বাইরেও বুঝানোর নানা ওপায় আছে। আলতো স্পর্শকে কিভাবে আরও আলতো করতে হয় তা তারা দেখিয়েছেন। জেষ্ঠ্যরা ছোটদের আলতো স্পর্শে আদর করছে আহ কী সুন্দর দৃশ্য! চোখ জুড়ানো অনবদ্য!!? আর গালে আলতো স্পর্শ করতে গিয়ে চোখে বা মাথায় লেগে ক্ষতি হতেই পারে অথবা বিপরীত লিঙ্গের কেও হলে তা তো আরও বহু নিচে লাগলেই পারে এতে দোষের কী আছে?! আরে যারা "মানুষ গড়ার কারিগর" এর গলার কলার ধরল, গায়ে আলতো হাত বুলিয়ে দিল তাদের কাছে তো এগুলো ডাল-ভাত হওয়া উচিত নয় কি?!
ও আরেকটি কথা, বলা হয় নি; অধ্যেতাসংঘের সকলে VVIP [Very Very Important Person]।
এমনকি তাদের সামনে ফটোগ্রাফিও নিষিদ্ধ। তারা যখন গরীব সালারপুতেগো ২ রুপিয়া ছুড়ে মারবে তখন তুলেলেই হয়, আলতো ছুয়াছুয়ির ছবি কী তুলতে আছে?! এক বদমাশ ফটোগ্রাফার একবার তাদের না জানিয়ে গ্রুপফটো তুলায়, তারা ক্যামেরার মেমোরি কার্ড খুলে একটু দেখিতে চাইয়াছিল ছবিতে শরীরের কেমন পরিস্ফুটন হইয়াছে। কিন্তু বজ্জাত ফটোগ্রাফার তা না দেওয়ায় ভ্রাতারা তাকে আলগো রক্তিম ছুয়ে দেয়। যদিও যা লেখা আছে সবই গুজব, কাল্পনিক। এর কোন ভিত্তি নেই। কেও বিভ্রান্ত হবেন না, গল্প মাত্র।
এমনকি তাদের সামনে ফটোগ্রাফিও নিষিদ্ধ। তারা যখন গরীব সালারপুতেগো ২ রুপিয়া ছুড়ে মারবে তখন তুলেলেই হয়, আলতো ছুয়াছুয়ির ছবি কী তুলতে আছে?! এক বদমাশ ফটোগ্রাফার একবার তাদের না জানিয়ে গ্রুপফটো তুলায়, তারা ক্যামেরার মেমোরি কার্ড খুলে একটু দেখিতে চাইয়াছিল ছবিতে শরীরের কেমন পরিস্ফুটন হইয়াছে। কিন্তু বজ্জাত ফটোগ্রাফার তা না দেওয়ায় ভ্রাতারা তাকে আলগো রক্তিম ছুয়ে দেয়। যদিও যা লেখা আছে সবই গুজব, কাল্পনিক। এর কোন ভিত্তি নেই। কেও বিভ্রান্ত হবেন না, গল্প মাত্র।
আবারও একটি ব্যর্থ আন্দোলন। বাচ্চাদের রাস্তা অবরোধ ও পাগলা হাতিকে আঘাত তাদের চোখে পড়লেও সেই পাগলা হাতির বর্জ্য নিজ হাতে পরিষ্কার আর মুমূর্ষু রোগীর জন্য ইমারজেন্সি লেন তৈরি অধ্যেতাসংঘের চোখে পড়েছিল না।
নিরাপদ সড়ক কী দেয়? টাকা-পয়সা, অর্থ-কড়ি?
একদা আন্দোলনের মুখে পড়তে না চাওয়ায় লাইসেন্স বিহীন হাতিগুলোকে মাহুতরা রাস্তায় না নামানোতে ছাত্রদের যাতায়তে অসুবিধা হওয়ায় কোন এক চাকুরীজীবীর কণ্ঠে কেও একজন শুনতে পেয়েছিল এক "পোলাপাইন আজাইরা আন্দোলন করছে, ভালো হইছে এখন রাস্তায় দাড়ায় থাক; তগো লিগায় আজ তগো এই অবস্থা"। সে সেইদিন এর বিরোধিতা করতে ছাড়েনি। যদিও চাকুরীজীবীর ছিল সঠিক সময়ে শ্রোমাগারে না উপস্থিত হইতে পারিলে চাকুরী যাবার ভয়। তবুও বলিতে হয়, কোন এক স্থানে এমন চাকুরীজীবী থাকিলে তা কখনই স্বাধীন হইত না।
নিরাপদ সড়ক কী দেয়? টাকা-পয়সা, অর্থ-কড়ি?
একদা আন্দোলনের মুখে পড়তে না চাওয়ায় লাইসেন্স বিহীন হাতিগুলোকে মাহুতরা রাস্তায় না নামানোতে ছাত্রদের যাতায়তে অসুবিধা হওয়ায় কোন এক চাকুরীজীবীর কণ্ঠে কেও একজন শুনতে পেয়েছিল এক "পোলাপাইন আজাইরা আন্দোলন করছে, ভালো হইছে এখন রাস্তায় দাড়ায় থাক; তগো লিগায় আজ তগো এই অবস্থা"। সে সেইদিন এর বিরোধিতা করতে ছাড়েনি। যদিও চাকুরীজীবীর ছিল সঠিক সময়ে শ্রোমাগারে না উপস্থিত হইতে পারিলে চাকুরী যাবার ভয়। তবুও বলিতে হয়, কোন এক স্থানে এমন চাকুরীজীবী থাকিলে তা কখনই স্বাধীন হইত না।
বলা বাহুল্য, যেদিন এই সমস্ত আন্দোলন একত্রিত হইয়াছিল বা চাকুরীজীবীরা তাদের চাকুরী হারানোর ভয়টি বুলিয়া গিয়াছিল তখন অধ্যেতাসংঘ ও তার ভিত্তিব্য এর কি পরিণতি হইয়ছিল, তা কেহ জানিলে জানাইয়া যাইবেন!!?
বি.দ্র.: কাহিনীটি পুরোপুরি কাল্পনিক। সাধু-চলিতের মিশ্রণ ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে।
ওপরের কাহিনীটি গুজব! যিনি লিখিয়াছেন তিনিও গুজব! এমনকি একটু আগে যেটি পড়িলেন সেটিও গুজব গুজব সব গু-জব!!!
Comments
Post a Comment